লাক্ষা চাষ পদ্ধতি ও লাক্ষা থেকে কি তৈরি হয়
পেয়ারা পাতার উপকারিতা জানুনপ্রিয় ভাই ও বোনেরা আপনারা অনেকেই লাক্ষা চাষ পদ্ধতি, লাক্ষা কি, লাক্ষা চাষের গুরুত্ব, লাক্ষা থেকে কি তৈরি হয়, লাক্ষা পোকার প্রকারভেদ ইত্যাদি সম্পর্কে জানতে চান।
তাহলে এই আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে শেষ পর্যন্ত পড়লে লাক্ষা সম্পর্কে আপনি উপরোক্ত বিষয় সহ আরও অনেক কিছু জানতে পারবেন।
ভূমিকা
আজকে আমরা লাক্ষা চাষ পদ্ধতি সম্পর্কে জানব। অতি প্রাচীন কাল হতে লাক্ষার ব্যবহার বা লাক্ষা চাষ আমাদের দেশে প্রচলিত ছিল। ভারতবর্ষে লাক্ষা শিল্প বিদেশী মুদ্রা অর্জনে যথেষ্ট অবদান রাখে। আবুল ফজল ১৫৯০ সালে তার বিখ্যাত গ্রন্থি "আইন আই আকবরি" তে ভারতে লাক্ষার বিবরণ দিয়েছিলেন।
ফরাসি পর্যটক তাভার্নিয়ের ১৬০৫ থেকে ১৬৮৯ সালের রচনা থেকে জানা যায় যে মুঘল আমলে ভারতবর্ষে লাক্ষার ব্যাপক চাষ হতো। ফাদার ট্যাকার্ড ১৭০৯ সালে লাক্ষা পতঙ্গের বর্ণনা দেন। জে ই ওকানোর ১৮৭৬ সালে লাক্ষার বাণিজ্য সম্পর্কে উল্লেখ করেন।
লাক্ষা পোকার নামকরণে Kerr ১৭৮২ সালে লাক্ষা পতঙ্গটির বিজ্ঞানসম্মত বর্ণনা সহকারে লাক্ষা পতঙ্গের নাম কক্কাস লাক্ষা (Coccus lacca) প্রদান করেন। পরবর্তীকালে গ্রীন ১৯২২ পূর্বোক্ত বৈজ্ঞানিক নামের পরিবর্তে Tachardina lacca নাম ব্যবহার করেন। কিন্তু বর্তমানে পতঙ্গটির বিজ্ঞানসম্মত নাম Laccifer lacca হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
লাক্ষা কি
লাক্ষা হচ্ছে এক ধরনের আঠালো রেসিনাস বস্তু যা অনেক ধরনের ক্ষুদ্র পতঙ্গ হতে নিঃসৃত হয়। সবচেয়ে প্রথম লাক্ষার ব্যবহার ও লাক্ষার চাষ ভারতে ১২০০ BC তে শুরু হয়।
আরও পড়ুন ভূমিকম্প কেন হয় বিস্তারিত জানুন
লাক্ষা শব্দটি হিন্দু শব্দ 'লাখ' হতে উদ্ভূত যার অর্থ হচ্ছে লক্ষ বা একশত হাজার বা বহু সংখ্যক পতঙ্গ হতে উল্লেখযোগ্য লাক্ষা উৎপন্ন করে থাকে। এক পাউন্ড লাক্ষা প্রস্তুত করতে ১৭ হাজার থেকে ৯০ হাজার পতঙ্গ লাগে। লাক্ষা শব্দটি প্রাচীন সংস্কৃত কর্মী যেমন : Atharvaveda এবং যাকে Luxa বলা হয়।
লাক্ষা পোকার প্রকারভেদ
লাক্ষা চাষের উপর ভিত্তি করে লাক্ষা পোকাকে নিম্নলিখিত ভাগে ভাগ করা যায় -
- কুসুমী (কুসুম গাছে জন্মে)
- রঙ্গিনী (পলাশ, কুল, গাছে জন্মে)
কুসুমী : কুসুমী লাক্ষাকে চাষের উপর ভিত্তি করে দুই ভাগে ভাগ করা যায়। যথা :
অগ্রহায়ণী : এরা জুন জুলাই মাসে জন্মাতে শুরু করে এবং ফেব্রুয়ারি মাসে পরিপক্ব হয় ও সংগৃহীত হয়। অগ্রহায়ণ মাসে ফসল সংগ্রহ করা হয়।
জৈষ্ঠি : এরা জানুয়ারি ফেব্রুয়ারি মাসে বংশবিস্তার করতে আরম্ভ করে। জুন জুলাই মাসে পরিপক্ব হয় ও জৈষ্ঠ মাসে সংগৃহীত হয়।
রঙ্গিনী ফসল :
কার্তিকী : এরা জুন জুলাই মাসে বংশবিস্তার করে এবং অক্টোবর নভেম্বর মাসে সংগৃহীত হয়।
বৈশাখী : এরা অক্টোবর নভেম্বর মাসে বংশবিস্তার করে এবং জুন জুলাই মাসে পরিপক্বতা লাভ করে।
লাক্ষা চাষ পদ্ধতি
লাক্ষা পোকার চাষ করতে হলে লাক্ষা যেসব গাছে পোষক হিসাবে থাকে তাদের জানতে হবে ও যত্ন নিতে হবে। লাক্ষা পোকা সাধারণত বাবলা গাছ, কুল গাছ, ডুমুর ও শিরিশ গাছে পোষক হিসেবে ব্যবহার করে। বাংলাদেশের আবহাওয়া লাক্ষা চাষের উপযোগী। চাষের উপর ভিত্তি করে লাক্ষা পোকাকে দুই ভাগে ভাগ করা যায় যেমন -
কুসুমী : এরা কুসুম গাছে জুন জুলাই মাসে জন্মায়। ফেব্রুয়ারি মাসে পরিপক্ব এবং সংগৃহীত হয়। এদের আবার অগ্রহায়ণীও বলা হয়।
রঙ্গিনী : এরা পলাশ, কুল ইত্যাদি গাছে জন্মে। জুন জুলাই মাসে বংশবিস্তার করে। আবার অক্টোবর নভেম্বর মাসে বংশবিস্তার করে জুন জুলাই মাসে পরিপক্বতা লাভ করে।
লাক্ষা পোকার চাষ করতে হলে যেসব গাছে লাক্ষা পোকা থাকে সেই সব কিছু বড় ডাল আগে থেকেই কেটে ফেলতে হবে। উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য গাছে সার প্রয়োগ করতে হবে।
লাক্ষা সংগ্রহ : গাছের ডালে লাক্ষার যে স্তর থাকে তাকে কাঠ লাক্ষা বলে। লাক্ষা সংগ্রহ করতে হলে যখন কাঠ লাক্ষার স্তর ০.৬ - ১.৩ সে.মি. পুরু হয় তখন তা কাটা বা সংগ্রহ করতে হয়। সংগৃহীত লাক্ষাকে ছুরি দিয়ে চেঁছে অথবা কোন কিছু দিয়ে পিটিয়ে কাঠি থেকে আলাদা করা হয়। এই লাক্ষায় গাছের শাখা প্রশাখা রং, পানি পোকার মৃতদেহ দ্রবণীয় অনেক রেজিন, অন্যান্য অপদ্রব্য মিশ্রিত থাকে।
চালুনি দিয়ে ছেঁকে বড় আবর্জনাকে সরিয়ে ফেলা হয়। ১ গ্রাম পানিতে ১ সের কাপড় কাঁচার সোডা দিয়ে লাক্ষা ধুয়ে নেওয়া হয়। ফলে সব ময়লা পরিষ্কার হয়ে যায়। এরপর একে শুকিয়ে নিতে হয়। সাধারণত ছায়ায় শুকানো ভালো। সাধারণত লাক্ষার রং হালকা হলুদ হয়।
এইভাবে যে লাক্ষা পাওয়া যায় তাকে বীজ লাক্ষা বা দানাদার লাক্ষা বলা হয়। এক পাউন্ড লাক্ষা তৈরি করতে হলে প্রায় দেড় লক্ষ লাক্ষা কীট এর প্রয়োজন হয় এবং ২ শত কেজি লাক্ষা থেকে ১০০ কেজি বীজ লাক্ষা পাওয়া যায়।
প্রক্রিয়াজাতকরণ : বীজ লাক্ষাকে প্রক্রিয়াজাত করে তা থেকে চাকতি গালা বা চাঁচ গালা তৈরি করা হয়। নিম্নলিখিত তিনটি উপায়ে গালা প্রস্তুত করা হয় -
তাপের সাহায্যে গালা প্রস্তুত : আগুনের তাপে গরম করে গালা প্রস্তুত করা হয়।
দ্রাবক আহরণ পদ্ধতি : এ পদ্ধতিতে মোম সমৃদ্ধ গালাকে একটি ট্যাংকে একটি দ্রাবকের সংস্পর্শে এক থেকে দুই ঘণ্টা গরম করা হয়, তারপর দ্রবণটিকে ছেঁকে পরিশ্রুত করে তা থেকে অদ্রবিত অংশ আলাদা করে নেওয়া হয়। এই কাজে দ্রাবক হিসাবে ইথানল ব্যবহার করা হয়।
বর্ণহীন গালা প্রস্তুত করতে প্রথমে বীজ লাক্ষাকে পানিতে সোডিয়াম কার্বনেট এর উত্তপ্ত দ্রবণ গলিয়ে নেওয়া হয়। তারপর দ্রবণটিকে মিহি পর্দায় ছেঁকে নেওয়া হয়। পরিষ্কৃত দ্রবণটিতে সোডিয়াম হাইপার ক্লোরাইড এর লঘু দ্রবণ দিয়ে বর্ণহীন বীজ লাক্ষাকে বাষ্পের তাপে উত্তপ্ত গ্রীডের মধ্যে গলানো হয়। তো আমরা লাক্ষা চাষ পদ্ধতি জানলাম।
লাক্ষা চাষের গুরুত্ব
লাক্ষা চাষ অর্থনৈতিকভাবে অত্যন্ত লাভজনক। পৃথিবীতে যত লাক্ষা উৎপাদন হয় তার ৯৭% ভারতে ব্যবহৃত হয়। কিন্তু বর্তমানে ৫০ থেকে ৬০% উৎপাদন হচ্ছে। লাক্ষা চাষে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা যায়। ভারতে ৩ - ৫০% লাক্ষা উৎপাদক হয় উড়িষ্যা, পাঞ্জাব, মালয় প্রদেশ, পশ্চিমা গুজরাট, রাজস্থান প্রভৃতি প্রদেশে।
বর্তমানে অল্প অংশ লাক্ষা দিল্লি ও কাশ্মীরে উৎপাদিত হচ্ছে। প্রতি বছরে ভারতে ১৫ হাজার মেট্রিক টন লাক্ষা উৎপাদিত হয়। ভারতে ৮৫ - ৯৫% লাক্ষা বিদেশে রপ্তানি করা হয়। বিশেষ করে যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র এবং রাশিয়া ও পশ্চিম জার্মানি বাংলাদেশে ছাড়ানো লাক্ষার দেহের চাহিদা মিটাতে রপ্তানি করার জন্য ব্যাপক লাক্ষা চাষ প্রয়োজন হয়।
আরও পড়ুন অনলাইনে টাকা ইনকামের উপায়
লাক্ষার বর্তমান ব্যবহার বাংলাদেশে প্রসার করা উচিত। বাংলাদেশে লাক্ষা চাষের প্রসারে বৃদ্ধি ঘটলে অনেক লোকের কর্মসংস্থান হবে। বেকার লোকের কর্মসংস্থানে পথ সুগম হবে, লাক্ষা চাষকে কেন্দ্র করে বহু কুটির শিল্প প্রতিষ্ঠা করা যায়। লাক্ষা চাষে প্রশিক্ষণার্থী বাড়ানো উচিত যাতে অনায়াসে এ শিল্পে উন্নয়ন করা যায়।
লাক্ষা থেকে কি তৈরি হয়
পূর্বে লাক্ষা থেকে তৈরি রঞ্জকের সাহায্যে অনেক জিনিস রং করা হতো। কিন্তু এখন কৃত্রিমভাবে তৈরি রং এর সাহায্যে বিভিন্ন জিনিস রং করা হয়। বর্তমানে আমাদের দৈনন্দিন জীবনের প্রয়োজনীয় বহু জিনিস তৈরিতে লাক্ষা ব্যবহৃত হয়। নিম্নে লাক্ষার গুরুত্বপূর্ণ ব্যবহার, লাক্ষা কি কাজে লাগে এবং লাক্ষা থেকে কি তৈরি হয় এসব সম্বন্ধে আলোচনা করা হলো -
- আমাদের আসবাবপত্রের পালিশ ও বার্ণিশের কাজে গালা পালিশে লাক্ষা ব্যবহৃত হয়।
- কাঠের আসবাবপত্র, জুতা, চামড়া ইত্যাদি পালিশ এবং ফিনিশিং এ লাক্ষা ব্যবহার করা হয়।
- লিথোগ্রাফিক কালি তৈরিতে উপাদান হিসেবে লাক্ষা ব্যবহার হয়।
- বৈদ্যুতিক কাজে ইনসুলেটিং অপরিবাহী পদার্থ হিসেবে লাক্ষা ব্যবহৃত হয়।
- গ্রামোফোন, রেকর্ড, বোতাম, উড়োজাহাজ তৈরি করতে লাক্ষা ব্যবহৃত হয়।
- ল্যামিনেটেড বোর্ড তৈরিতে, কাগজের বোর্ড বাঁধাইয়ে লাক্ষার দ্রবণ ব্যবহার করা হয়।
- ফটোগ্রাফি শিল্পে অ্যাডহেসিভ মাউন্টিং কাগজ তৈরিতে শেলাকের বিশেষ ব্যবহার দেখা যায়।
- বই বাঁধাই এ বইয়ের উপর পতঙ্গ বা ছত্রাকের আক্রমণ রোধে শেলাকের আবরণ তৈরি করতে লাক্ষা ব্যবহৃত হয়।
- চিত্র সংরক্ষণ জল রং ও তেল রং এর পামটেল করা চিত্রকলা সংরক্ষণের জন্য শেলাকের আবরণ বেশ উপকারী ভূমিকা রাখে।
- ঘরের দেয়াল রং করা, কাপড় রং করা ও চামড়া জাত দ্রব্য রং করাতে প্রচুর লাক্ষা ব্যবহৃত হয়।
- প্লাস্টিক শিল্পের বিভিন্ন ছাঁচ তৈরিতে লাক্ষা ব্যবহার হয়।
- অস্ত্র ও রেলওয়ে কারখানায় বিভিন্ন অটোমোবাইল, ইঞ্জিন মেরামতে ও রক্ষণাবেক্ষণে আঠালো পদার্থ হিসেবে লাক্ষা ব্যবহার করা হয়।
- পার্সেল চিঠি প্রভৃতিতে সীলমোহর করার জন্যও লাক্ষা ব্যবহার হয়।
- শিরিষ কাগজ তৈরিতে লাক্ষা ব্যবহৃত হয়।
- খোদাই করা লিখনে, কাগজ তৈরিতে লাক্ষার প্রয়োজন হয়।
- বিভিন্ন প্রকার প্রসাধন সামগ্রী লাক্ষা দ্বারা তৈরি হয়।
- ছাপা কারখানায় কালি হিসেবে লাক্ষা ব্যবহৃত হয়।
- কাঁচ শিল্পে বিশেষ করে আয়না তৈরিতে লাক্ষার প্রয়োজন হয়।
- মোম, পেন্সিল ও খেলনায় লাক্ষার ব্যবহার হয়ে থাকে।
- যানবাহনের পেট্রোল নিরোধক সিমেন্ট প্রস্তুত করতে শেলাক স্পিরিট বার্ণিশ ব্যবহার করা হয়।
- জুট-ল্যামিনেটেড বোর্ড তৈরি করতে গুড়া লাক্ষা বা লাক্ষার দ্রবণ ব্যবহার করা হয়।
- লাক্ষা, কাজু বাদামের খোসার গুড়া, পাট একত্রে মিশিয়ে পানি নিরোধক চট তৈরি করতে লাক্ষার ব্যবহার হয়।
- পুতুল তৈরি, মাটির হাড়ি, ঔজ্জ্বল্য তৈরি করতে অ্যামোনিয়ায় দ্রবীভূত শেলাক ব্যবহার করা হয়।
- কাগজের শক্ত-বোর্ড তৈরি এবং প্লাইউডে শেলাক ব্যবহার করা হয়।
- ডেন্টাল প্লেট তৈরি করতে লাক্ষা ব্যবহৃত হয়।
- রাবার তন্তু ও রাবার ক্লথের নিখুঁত ফিনিশিং এর কাজে লাক্ষার ব্যবহার হয়।
- লোহার মরিচা রক্ষায় প্রলেপন হিসেবে লাক্ষার ব্যবহার হয়।
- অ্যালুমিনিয়াম, দস্তা, তামা ও ধাতুর সংকর প্রস্তুতিতে লাক্ষার ব্যবহার রয়েছে।
- পিতল সামগ্রীর ঔজ্জ্বল্য বাড়াতে লাক্ষা ব্যবহৃত হয়।
- ঘরবাড়ির রং বাড়াতে লাক্ষা ব্যবহৃত হয়।
- মাইকোনাইট তৈরির জন্য ম্যাগনিফাইড লাক্ষা অ্যাডহেসিভ হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
- স্বর্ণালঙ্কার ফাঁপা অংশে গালা ব্যবহার করা হয়।
- চামড়ার সাজ, পোশাকে লাক্ষা ব্যবহৃত হয়।
- সিলভার কাটিং এ লাক্ষা ব্যবহৃত হয়।
- ওয়াটার প্রুফ কালি তৈরিতে লাক্ষা দরকার হয়।
- ড্রাই মাউন্টিং টিস্যু পেপার তৈরিতে লাক্ষা ব্যবহৃত হয়।
- ব্রোকেড সূতা ও ধাতব কয়েলের কোটিং দিতে লাক্ষার প্রয়োজন হয়।
- উড়োজাহাজ তৈরিতে লাক্ষার ব্যবহার হয়।
- কেরোসিন তৈরি ও অনেক ঔষধ প্রস্তুত করতে লাক্ষা দরকার হয়।
- লিনোলিয়াম এক ধরনের মেঝে ঢাকবার আস্তরণ জাতীয় পদার্থ যা তৈরিতে লাক্ষা ব্যবহৃত হয়।
- জুতার পালিশ তৈরি, কালির উজ্জ্বলতা বাড়াতে ও ভেজা রাখতে লাক্ষা প্রয়োজন হয়।
- তাসের উজ্জ্বল আবরণী তৈরিতে লাক্ষা প্রয়োজন হয়।
এছাড়া মানুষের নিত্য প্রয়োজনীয় দৈনন্দিন অনেক কাজেই লাক্ষার ব্যবহার রয়েছে। এক-কথায় আমরা বলতে পারি লাক্ষা বিভিন্ন রাসায়নিক দ্রব্য প্রস্তুতিতে আঠালো পদার্থ হিসেবে ব্যবহার হয়ে থাকে। অর্থাৎ লাক্ষা চাষ পদ্ধতি অবলম্বন করে অনেক কিছু তৈরি করা যায়।
লেখকের মন্তব্য : লাক্ষা চাষ পদ্ধতি ও লাক্ষা থেকে কি তৈরি হয়
বৈজ্ঞানিকভাবে সর্বপ্রথম লাক্ষা ও লাক্ষা পোকার রিপোর্ট করেছিলেন Kerr এবং Glover নামক বিজ্ঞানী ১৭৮২ সালে। এরপর বিভিন্ন জন এদের অর্গানাইজেশন, বিস্তৃতি, ট্যাক্সোনমি, হোস্ট উদ্ভিদ, চাষ, উৎপাদন এসবের রাসায়নিক ক্রিয়াকলাপ ও টেকনোলজির উপর কাজ করেছেন। লাক্ষা একটি পুরাতন শিল্প। এ শিল্পের বয়স হাজার হাজার বছর বলে ধারণা করা হয়।
লাক্ষা Laccifer lacca নামক cocid পতঙ্গ হতে নিঃসৃত হয়। লাক্ষা পোকা থেকে নিঃসৃত লাক্ষা বাণিজ্যিকভাবে গালা তৈরি হয় যা বিভিন্ন কাজে লাগে। প্রিয় পাঠক, আজকে আমরা জানতে পেরেছি লাক্ষা কি, লাক্ষা পোকার প্রকারভেদ, লাক্ষা চাষ পদ্ধতি, লাক্ষা চাষের গুরুত্ব, লাক্ষা থেকে কি তৈরি হয় বা লাক্ষা কি কাজে লাগে ইত্যাদি সম্পর্কে। আরও অনেক তথ্য জানার জন্য আমাদের এই ওয়েবসাইট প্রতিদিন ভিজিট করুন। ধন্যবাদ
দি প্লেনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url