মিলো পাউডারের উপকারিতা ও অপকারিতা এবং খাওয়ার নিয়ম

হার্ট ভালো আছে বুঝার উপায় জানুনসম্মানিত পাঠক, আপনি হয়তো নেসলে মিলো পাউডারের উপকারিতা ও অপকারিতা বা ক্ষতিকর দিক, নেসলে মিলো পাউডার খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে খোঁজাখুঁজি করছেন।
মিলো পাউডারের উপকারিতা ও অপকারিতা
আজকে আমরা উপরোক্ত টপিক গুলো সহ নেসলে মিলো পাউডারের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে আলোচনা করব।

ভূমিকা

নেসলে মিলো পাউডার হল একটি শক্তি সরবরাহকারী এবং স্বাস্থ্যকর পানীয়। এটি পুষ্টিগুণে ভরপুর এবং আমাদের শরীরে শক্তি উৎপন্ন করে। মিলোতে রয়েছে প্রোটোমল্ট, একটি মল্ট নির্যাস যাতে রয়েছে জটিল কার্বোহাইড্রেট এর মিশ্রণ যা আপনার শরীরের জন্য শক্তি সরবরাহ করে। মিলো (Milo) প্রাকৃতিক উপাদান থেকে তৈরি।
এটি কোন কৃত্রিম খাদ্য বা কোন ঔষধ নয়। এটি চকলেট স্বাদযুক্ত যা শিশু এবং বয়স্করা সহজেই পছন্দ করে। নেসলে মিলো পাউডারের উপকারিতা আমাদের শরীরের জন্য অনেক বেশি। তবে কিছু ক্ষেত্রে নেসলে মিলো পাউডারের অপকারিতা রয়েছে। তাই আমাদের সঠিকভাবে নেসলে মিলো পাউডার খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জানতে হবে।

মিলো পাউডারের পুষ্টিগুণ

মিলোতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ক্যালসিয়াম, আয়রন, এবং ভিটামিন এ। এছাড়া প্রতি ৩০ গ্রাম মিলো পাউডারের পুষ্টিগুণ নিচে দেওয়া হল -
  • ক‍্যালরি - ১৩০ কিলো-ক্যালরি
  • কার্বোহাইড্রেট - ২০ গ্রাম
  • ফাইবার - ১ গ্রাম
  • শর্করা - ৭ গ্রাম
  • চর্বি - ৩ গ্রাম
  • কোলেস্টেরল - ৫ মিলিগ্রাম
  • প্রোটিন - ৩ গ্রাম
  • সোডিয়াম - ১৫০ মিলিগ্রাম

মিলো পাউডারের উপকারিতা

মিলো বাচ্চা থেকে শুরু করে বয়স্ক পর্যন্ত সবাই পছন্দ করে। স্বাস্থ্যের জন্য মিলো পাউডারের উপকারিতা রয়েছে। মিলর স্বাস্থ্য উপকারিতা বর্ণনা করা হল -

মিলোতে রয়েছে উচ্চ প্রোটিন : উচ্চ প্রোটিন শরীরের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এটি কোষের পুনর্জন্মকে ত্বরান্বিত করতে সাহায্য করে।

মিলোতে রয়েছে ক্যালসিয়াম : মিলোতে থাকা ক্যালসিয়াম হাড় ও দাঁত বিকাশের জন্য সহায়তা করে। শিশুর বিকাশের জন্য এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

মিলোতে প্রোটোমল্ট রয়েছে : প্রোটোমল্ট ক্যালরির একটি ভালো উৎস এবং এতে চিনির পরিমাণ কম থাকে। এটির কারণে শরীরে ট্রাইগ্লিসারাইড তৈরি হয় না। যাতে আমাদের শরীর সবসময় সুস্থ থাকে এবং শর্করা বৃদ্ধি (ডায়াবেটিস) থেকে মুক্ত থাকে।

মেজাজ ভালো রাখে : আপনার যদি মেজাজ খারাপ থাকে, তবে এক গ্লাস ঠাণ্ডা মিলো পান করার চেষ্টা করুন। কারণ এতে থাকা চকলেটের উপাদান এন্ডোরফিন এবং সেরোটোনিন হরমোন নিঃসরণ করে। এই উভয় হরমোনকে সুখী হরমোন বলে। যার কারণে মিলো খেলে মেজাজ ভালো হয়।

পেশী তৈরি করে : মিলো কিশোরদের জন্য একটি উপযুক্ত খাবার। আপনি যদি একটি শক্তিশালী মাসল পেতে চান তাহলে মিলো দুধের সাথে মিশিয়ে নিয়মিত পান করুন।

শরীরের শক্তি যোগায় : মিলো একটি সুস্বাদু এনার্জি ড্রিঙ্ক। যা আপনাকে পর্যাপ্ত কার্বোহাইড্রেট, ইলেক্ট্রোলাইট এবং হাইড্রেশন দেয়, যা আপনাকে সারাদিন কাজ করির শক্তি পেতে সাহায্য করে।

রক্তস্বল্পতা দূর করে : মিলো আয়রনের ঘাটতি পূরণ করে। এটি রক্ত উৎপাদন বাড়ায় এবং রক্তস্বল্পতা দূর করতে পারে।

ওজন বৃদ্ধি করে : যারা চিকন স্বাস্থ্য নিয়ে চিন্তিত, তারা নিয়মিত দুধের সাথে মিলো মিশিয়ে পান করুন। প্রতিদিন এক গ্লাস করে মিলো পান করলে দ্রুত ওজন বৃদ্ধি পাবে।

খেলাধুলা এবং ব্যায়ামের জন‍্য উপকারী : যারা নিয়মিত খেলাধুলা এবং ব্যায়াম করেন তাদের জন্য এটি খুব ভালো একটি পানীয় হতে পারে। খেলাধুলা এবং ব্যায়াম এর সময় আমাদের প্রচুর শক্তির দরকার হয়। মিলো খেলে শরীর ক্লান্ত হয় না এবং শক্তির ঘাটতি পূরণ করে।

মিলো পাউডারের অপকারিতা

মিলো পাউডারের আপকারিতা অর্থাৎ, ক্ষতিকর দিক রয়েছে কোনও কোনও ক্ষেত্রে। মিলো পাউডারে চিনি রয়েছে। অতিরিক্ত মিলো পাউডার খেলে দ্রুত মোটা হয়ে যেতে পারেন। এটি ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য সমস্যার কারণ হতে পারে।

অতিরিক্ত চিনি দাঁতের ক্ষয় এবং মুখের ভেতর ক্ষতিকারক এসিড তৈরি করে। অতিরিক্ত পরিমাণ মিলো খেলে পাতলা পায়খানা হতে পারে। শিশুদের মিলো খাওয়ার পর কোন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দিলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

আর গর্ভাবস্থায় মিলো খাওয়ার আগেও চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া আবশ্যক। আমাদের সঠিকভাবে মিলো পাউডার খাওয়ার নিয়ম জানতে হবে। তাহলে মিলো পাউডারের অপকারিতা থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে।

মিলো পাউডার খাওয়ার নিয়ম

মিলো পাউডার সাধারণত গরম পানিতে বা দুধে মিশিয়ে খাওয়া হয়ে থাকে। তবে চাইলে ঠাণ্ডা পানি বা দুধের সাথে মিশিয়েও এটি খেতে পারেন। চকলেট ফ্লেভারযুক্ত মিলো পাউডার সকলেই খেতে পছন্দ করে। বিভিন্ন উপায়ে মিলো খাওয়া যায়। মিলো পাউডার খাওয়ার নিয়ম গুলো হল -
  • সরাসরি পানি বা দুধের সাথে মিশিয়ে খাওয়া যায়।
  • কেক তৈরিতে বা কেকের উপর মিলো পাউডার ব্যবহার করা যায়।
  • আইসক্রিম তৈরিতে মিলো ব্যবহার করতে পারেন।
  • পাউরুটির উপর মিলো পাউডার ছিটিয়ে দিয়ে খেতে পারেন।

উপসংহার : মিলো পাউডারের উপকারিতা ও অপকারিতা এবং খাওয়ার নিয়ম

শক্তিশালী এবং স্বাস্থ্যবান শরীর পেতে হলে নিয়মিত এক গ্লাস করে নেসলে মিলো খেতে পারেন। রাতে ঘুমানোর আগে মিলো খেতে পারেন, এতে ঘুমাতে সহজ হয়। মিলো পাউডার কাঁচা না খেয়ে দুধের সাথে খাওয়ার চেষ্টা করুন। তাহলে মিলো পাউডারের উপকারিতা বেশি পাওয়া যায়।

পক্ষান্তরে মিলে পাউডারের উপকারিতা রয়েছে তাই পূর্বে কোন অসুখ থেকে থাকলে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে তারপর মিলো পাউডার খেতে পারেন। ১৯৩৪ সালে অস্ট্রেলিয়ার স্মিথ-টাউনে একটি কারখানায় মিলো তৈরি শুরু হয়।

বর্তমানে বিশ্বব্যাপী ২৪টি কারখানায় মিলো তৈরি করা হয় এবং ৪০ টির বেশি দেশে বিক্রি হয়। বাংলাদেশে ১ কেজি নেসলে মিলো পাউডারের প্যাকেট এর দাম ৯০০ টাকা। সম্মানিত পাঠক আজকে আমরা জানলাম মিলো পাউডারের উপকারিতা, মিলো পাউডারের অপকারিতা, মিলো পাউডার খাওয়ার নিয়ম এবং মিলো পাউডারের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

দি প্লেনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url