কম্পিউটারের উপকারিতা ও অপকারিতা জানুনমোবাইল ফোনের উপকারিতা ও অপকারিতা: মানুষ ভবিষ্যতের দিকে যত এগোচ্ছে ততো উন্নত প্রযুক্তির দ্বারা বিভিন্ন ডিভাইস আবিষ্কারের মাধ্যমে মানুষের জীবন বদলে যাচ্ছে। তেমনই একটি জীবন বদলে দেওয়া জনপ্রিয় আবিষ্কার হল মোবাইল ফোন, যা ব্যবহারের মাধ্যমে আমাদের মধ্যে অনেকের জীবন বদলে গিয়েছে।
তবে মোবাইল ফোনের উপকারিতা যেমন রয়েছে, ঠিক তেমনি মোবাইল ফোনের অপকারিতা বা ক্ষতিকর দিকও রয়েছে। মোবাইল ফোনের সঠিক ব্যবহারের মাধ্যমে জীবন পরিবর্তন হয় এবং এর অপব্যবহারের কারণে জীবন ধ্বংসের দিকে এগিয়ে যায়।
আপনারা অনেকেই মোবাইল ফোনের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানেন না। আমরা আপনাকে মোবাইল ফোনের উপকারিতা ও অপকারিতা গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জানাবো।
ভূমিকা
মোবাইল শব্দটি আমাদের কাছে অতি পরিচিত একটি শব্দ। মোবাইল ফোন অর্থ ভ্রাম্যমান যোগাযোগ। এটির মাধ্যমে আমরা সহজেই ভ্রাম্যমান অবস্থায় যোগাযোগ করতে পারি। শুধু তাই নয়, বর্তমানে মোবাইল ফোন অনেক উন্নত হয়েছে, যার মাধ্যমে আমরা সকল সুবিধা পেতে পারি।
মোবাইল ফোন ছাড়া মানুষের জীবন যেন অচল হয়ে যায়। প্রতিটি ক্ষেত্রেই আমাদের মোবাইল ফোন ব্যবহার করতে হয়। মোবাইল ফোন বিশ্বের সকল তথ্যের ভাণ্ডার, তাই মোবাইল ফোন ব্যবহার করা শেখা আমাদের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে।
তবে মোবাইল ফোনের অপকারিতা গুলোও জানতে হবে, এর ক্ষতিকর দিক থেকে বাঁচার জন্য। চলুন দেরি না করে মোবাইল ফোনের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
মোবাইল ফোনের উপকারিতা
মোবাইল ফোন আমাদের যোগাযোগের উপায় পরিবর্তন করেছে। মোবাইলের আগে, আপনার দূরে বসবাসকারী ব্যক্তির সাথে যোগাযোগের জন্য ল্যান্ডলাইন ফোন বা চিঠির ব্যবহার ছিল। তবে মোবাইল ফোন যোগাযোগের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, এটির অন্যান্য বিভিন্ন উপকারিতা এবং সীমাবদ্ধতাও রয়েছে।
বেশিরভাগ মানুষ মোবাইল ফোনের উপকারিতা সম্পর্কে সচেতন। মোবাইল ফোনের উপকারিতা গুলো নিম্নে আলোচনা করা হল-
সহজ যোগাযোগ ব্যবস্থা
মোবাইল ফোন যোগাযোগকে সহজ করেছে, এটি ব্যবহার করে পৃথিবীর যে কোন স্থান থেকে যে কোন সময় আমাদের বন্ধু, পরিবারের সদস্য বা সহকর্মী এবং অন্যান্যদের সাথে সহজেই যোগাযোগ করতে পারি।
শিক্ষা ক্ষেত্রে মোবাইল ফোনের উপকারিতা
মোবাইল ফোনের একটি বড় সুবিধা হল এটি শিক্ষা ব্যবস্থায় ব্যবহার করা যায়। মোবাইল ফোন বিভিন্ন বিষয়ে জ্ঞান বা তথ্য অর্জন করতে ব্যবহার করা যেতে পারে। সুবিধার জন্য আজকাল বেশিরভাগ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলোতে অনলাইনে শিক্ষা প্রদান করা হয়।
করোনা মহামারীতে আমরা দেখেছি যে, শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা ও সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করার জন্য তাদের নিজ নিজ প্রতিষ্ঠান কর্তৃক প্রদত্ত অনলাইন ক্লাস নেওয়া হয়েছে। এছাড়া যে কোন বিষয়ে জানার জন্য মোবাইলে বিভিন্ন সার্চ ইঞ্জিনের মাধ্যমে সার্চ করলে আমরা সেসব বিষয় সহজেই জানতে পারি।
সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে মোবাইল ফোন
আজকের যুগে, মোবাইল ফোন শুধুমাত্র কল করার উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হয় না। মোবাইল ফোন সোশ্যাল মিডিয়া প্রেমীদের জন্য বড় একটি উপহার। টুইটার, ইনস্টাগ্রাম, স্ন্যাপ চ্যাট, ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ ইত্যাদির মতো সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাপস গুলি যে কোন সময় আমাদের নখদর্পণে থাকে।
আমরা সরাসরি আমাদের মোবাইল ফোন থেকে সোশ্যাল মিডিয়াতে আমাদের ছবি এবং পোস্টগুলো শেয়ার করতে পারি। মোবাইল আমাদের সর্বদা সোশ্যাল মিডিয়া এক্সেস করার সুবিধা দিয়ে থাকে। মানুষ তাদের অবসর সময়ে সামাজিক মিডিয়া প্ল্যাটফর্মের টাইমলাইনে স্ক্রোল করতে তাদের মোবাইল ফোন ব্যবহার করে।
মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ব্যবসার প্রচার
আপনি আপনার ব্যবসা প্রচারের জন্য মোবাইল ফোন ব্যবহার করতে পারেন। আপনি আপনার পণ্য সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে তার উপকারিতা সম্পর্কে সঠিক তথ্য দিয়ে সহজে আপনার ব্যবসা প্রচার করতে পারেন। আজকের যুগে বেশিরভাগ কোম্পানি সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে ব্যবসার প্রচার এবং প্রসার ঘটাচ্ছে। আর সোশ্যাল মিডিয়ার সকল কাজ মোবাইল ফোনের মাধ্যমে সহজেই করা যায়।
মোবাইল ফোনের মাধ্যমে নিরাপত্তা ব্যবস্থা
আজকের বিশ্বে অপরাধমূলক কার্যকলাপ দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। আপনি অপহরণ, চুরি, ডাকাতি বিভিন্ন অবৈধ কার্যকলাপের কথা শুনেছেন, মোবাইল ফোন আমাদের এসব অবৈধ কার্যকলাপ থেকে বাঁচাতে সাহায্য করতে পারে। কারণ এটি দ্রুততম যোগাযোগের যন্ত্র। এটি আমাদেরকে দ্রুত পুলিশ এবং আত্মীয়দের কল করতে সাহায্য করে এবং আমাদের যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বাঁচাতে পারে।
মোবাইল ফোন জরুরী পরিস্থিতিতে সহায়তা করে
ধরুন কোথাও হারিয়ে গিয়েছেন বা ভুল করে অজানা এলাকায় প্রবেশ করেছেন বা রাস্তা হারিয়েছেন, এমন অবস্থায় আপনি আপনার মোবাইল ফোনে থাকা গুগল ম্যাপ ব্যবহার করে সহজেই আপনি আপনার গন্তব্যে পৌঁছাতে পারবেন। আবার যদি আমরা অসুস্থ হই এবং একজন ডাক্তারের প্রয়োজন হয়, তাহলে আমরা দ্রুত মোবাইল ফোন ব্যবহার করে ডাক্তারের থেকে সেবা নিতে পারি।
মোবাইলের মাধ্যমে টাকা আয় করুন
আমরা আমাদের স্মার্টফোন ব্যবহার করে অর্থ উপার্জন করতে পারি। আমরা ব্লগিং, ইউটিউব ভিডিও, ব্যবসার প্রচার এবং প্রসার, ফেসবুক মার্কেটিং, লেখালেখি করে ইনকাম, বিভিন্ন অ্যাপস ব্যবহার করে ইনকাম করতে পারি।
বিনোদনের জন্য মোবাইল ফোন ব্যবহার
বর্তমান বিশ্বে মোবাইল হল বিনোদনের জনপ্রিয় মাধ্যম। বর্তমানের নতুন আপডেট হওয়া মোবাইলে বড় বড় HD ডিসপ্লে রয়েছে। এটি ব্যবহার করে মানুষ সিনেমা দেখতে, গান শুনতে এবং গেম খেলতে পারে। বর্তমানে সব সময় মানুষ বিনোদনের জন্য মোবাইল ফোন ব্যবহার করে।
মোবাইল ফোনে ক্যামেরা ব্যবহার করা
মোবাইল ফোনের রয়েছে সেরা রেজোলিউশন ক্যামেরা। মোবাইল ব্যবহারের আগে মানুষ স্মরণীয় মুহূর্তগুলো বন্দী করার জন্য ক্যামেরা ব্যবহার করত। কিন্তু এখন মোবাইল ফোন দিয়ে তা করা যায়। বর্তমানে মোবাইলের সামনের দিক এবং পিছনের দিক উভয় দিকেই ক্যামেরা রয়েছে, যার মাধ্যমে আমরা সেলফি তুলতে পারি। মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ছবি তোলা খুবই সহজ।
মোবাইল ফোনে জিপিএস এর ব্যবহার
জিপিএস মোবাইল ফোনের অন্যতম সেরা একটি সুবিধা। এটির মাধ্যমে মোবাইল আমাদের বর্তমান অবস্থান এবং গন্তব্য সম্পর্কে তথ্য দেয়। আগে লোকেশন ট্র্যাক করা অনেক কঠিন ছিল, কিন্তু বর্তমানে আধুনিক মোবাইলের মাধ্যমে সহজেই বর্তমান অবস্থান এবং গন্তব্য ট্র্যাক করা যায়।
আমরা মানচিত্রে একটি গন্তব্য নির্বাচন করতে পারি, এটি আমাদের পথের দিকনির্দেশনা দেয় এবং পৌঁছানোর জন্য শর্টকাট রাস্তা দেখিয়ে দেয় এবং সময়ও বলে দেয়।
মোবাইল ফোনের টর্চলাইট এর উপকারিতা
মোবাইল ফোনে টর্চ লাইট রয়েছে, যার মাধ্যমে সহজেই আমারা অন্ধকারে কোন কিছু খুঁজে পেতে পারি। অন্ধকারে ছবিও তুলতে পারি।
মোবাইল ফোনের অ্যালার্ম এর উপকারিতা
আমরা মোবাইল ফোনে অ্যালার্ম এবং রিমাইন্ডার সেট করতে পারি। আমরা আমাদের মোবাইল ফোনে আমাদের রুটিন, বিভিন্ন মিটিং এবং ওষুধ খাওয়ার সময় ইত্যাদি সেট করতে পারি, যা আমাদের সমস্ত নির্ধারিত কাজ সময় মতো মনে করিয়ে দিতে সাহায্য করে।
অনলাইন ব্যাংকিং সেবা
মোবাইল ফোনের মাধ্যমেও অনলাইন ব্যাংকিং করা যায়। মোবাইলের মাধ্যমে ব্যাংক একাউন্ট গুলোর এক্সেস করা, একাউন্টের স্থিতি পরীক্ষা করা এবং এক ব্যাংক থেকে অন্য ব্যাংকে টাকা স্থানান্তর করা যায়। বর্তমানে আমরা মোবাইল ফোনের মাধ্যমে বিদ্যুৎ বিল এবং অন্যান্য ফি পরিশোধ করতে পারি।
মোবাইল ফোনে ক্যালকুলেটর এর সুবিধা
মোবাইল ফোনে ক্যালকুলেটর এর সুবিধা রয়েছে। আমাদের যদি বিল, ট্যাক্স, জ্যামিতিক গণনা বা অন্যান্য গণনা করার প্রয়োজন হয় তবে আমরা মোবাইল ব্যবহার করতে পারি। কিছু মোবাইলের সাথে বৈজ্ঞানিক ক্যালকুলেটরও থাকে, যা শিক্ষার্থীদের গাণিতিক বিষয় গুলো গণনা করতে সহায়ক হয়।
এ ছিল মোবাইল ফোনের উপকারিতা গুলো। চলুন এখন মোবাইল ফোনের অপকারিতা বা ক্ষতিকর দিকগুলো কি তা জেনে নেই।
মোবাইল ফোনের অপকারিতা
অসংখ্য সুবিধার পাশাপাশি মোবাইল ফোনের অপকারিতা ও রয়েছে। নিম্নে মোবাইল ফোনের অপকারিতা গুলো আলোচনা করা হল-
শিক্ষার্থীদের মোবাইলের আসক্তি
অনেক শিক্ষার্থীদের মধ্যে দেখা যায় যে মোবাইলের কারণে তাদের পড়াশোনায় মন বসে না, কারণ এই ডিভাইসটিতে এমন অনেক অ্যাপ্লিকেশন রয়েছে ব্যবহারকারীদের সহজেই আকৃষ্ট করতে পারে। এরকম একটি অ্যাপ্লিকেশন হল মোবাইল গেম। এইসব গেম কয়েক দিন ধরে খেললে মানুষ আসক্ত হয়ে পড়ে এবং তাদের লক্ষ্য থেকে দূরে সরে যায়।
মোবাইল ফোনের প্রতি আসক্তিকে বলা হয় নোমোফোবিয়া। এটি একটি মানসিক ব্যাধি, অনেক মানুষ এই বাধিতে আক্রান্ত হয়ে নিজেকে মোবাইল ফোনের ব্যবহার থেকে দূরে রাখতে পারে না। মোবাইল ফোনের অতিরিক্ত ব্যবহারের ফলে এই রোগ হয়।
কানের সমস্যা হয়
আমরা অনেকেই মোবাইল ফোনে দীর্ঘ সময় ধরে গান শুনি, সিনেমা দেখি বা হেডফোন ব্যবহার করে মিউজিক শুনে থাকি, যা একজন ব্যক্তির কানে শোনার ক্ষমতাকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। গবেষণায় দেখা গেছে যে, মোবাইল ফোনে বেশিক্ষণ কথা বললে, হেডফোন ব্যবহার করে উচ্চস্বরে কোন কিছু শ্রবণ করলে কানে শোনার ক্ষমতা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয়।
সময়ের অপচয় হয়
মোবাইল বিভিন্ন দিক থেকে সহায়ক হলেও সময় অপচয়ের ক্ষেত্রে এটি অত্যন্ত ভয়াবহ। মোবাইল ফোনের অপকারিতা গুলোর মধ্যে অন্যতম অপকারিতা হল সময় অপচয় করা। এতে বেশিরভাগ শিক্ষার্থী এবং কিশোর-কিশোরী ক্ষতিগ্রস্ত হয়। গেম খেলতে, সিনেমা দেখতে, গান শুনতে এবং বিভিন্ন ধরনের বিনোদন উপভোগ করতে তাদের মূল্যবান সময় নষ্ট করে।
সাইবার বুলিং
সাইবার বুলিং মানে হল অন্য কারো সম্পর্কে নেতিবাচক, মিথ্যা এবং ক্ষতিকারক সামগ্রী পাঠানো, পোস্ট করা বা শেয়ার করা। এমনকি মানুষের গোপন তথ্য ফাঁস করা হয় এই মোবাইল ফোনের মাধ্যমে, যা মানুষের জীবনকে বিপদে ফেলে। মোবাইল ফোন হারিয়ে গেলে নিজের ব্যক্তিগত প্রয়োজনীয় তথ্য এবং গোপন তথ্য গুলো অন্যের হাতে চলে যায়।
নিরাপত্তা
মোবাইল ফোনের অপকারিতা গুলোর মধ্যে অন্যতম অপকারী দিক হল এটির মাধ্যমে হ্যাকাররা আপনার গোপন তথ্য সহজেই হ্যাক করে নিতে পারে। আইফোন আই-ও-এস কিছুটা নিরাপদ হলেও অ্যান্ড্রয়েড ফোনে কারো গোপনীয় তথ্য এবং ডেটা হ্যাক করা হ্যাকারদের পক্ষে অনেক সহজ, তাই এটি অনিরাপদ। বিভিন্ন অ্যাপস্ এর মাধ্যমে অ্যান্ড্রয়েড ফোনে হ্যাকাররা আপনার গোপনীয় তথ্য চুরি করতে সক্ষম হয়। তাই আমাদের উচিত মোবাইলে গোপনীয় তথ্য না রাখা।
স্বাস্থ্য সমস্যা
মোবাইল ফোনের অত্যধিক ব্যবহার স্বাস্থ্যের সমস্যা বয়ে আনে। যেমন চোখ ফুলে যায়, দৃষ্টিশক্তি হ্রাস পায়, মাথা ব্যথা করে, ত্বকে ক্যান্সার হতে পারে এবং মানসিক ব্যাধিতে আক্রান্ত হতে পারে।
ঘুমের সমস্যা
অতিরিক্ত পরিমাণ মোবাইল ফোন ব্যবহার ঘুমের রুটিনকে খারাপ ভাবে প্রভাবিত করে। ঘুমানোর সময়ও মানুষ মোবাইল ব্যবহার করে। মোবাইল ফোনে আসক্ত হওয়ার কারণে ঘুম ধরে না এবং রাত জাগার কারণে মস্তিষ্ক এবং হার্টের ক্ষতি হয়।
দুর্ঘটনা
বর্তমানে অনেক মানুষ মোবাইল ফোনের মধ্যে সব সময় আটকে থাকে। এমনকি রাস্তায় হাঁটা এবং গাড়ি চালানো অবস্থাতেও মোবাইল ফোন ব্যবহার করতেই থাকে। এ সময় বিভিন্ন দুর্ঘটনা ঘটে এবং অন্যের জীবন ঝুঁকির মধ্যে পড়ে। তাই গাড়ি চালানো অবস্থায় এবং হাঁটা অবস্থায় সচেতন থাকুন।
বন্ধুবান্ধব ও আত্মীয়দের থেকে দূরত্ব
যদিও মোবাইল মানুষের সাথে মানুষকে সহজেই সংযুক্ত করে এবং আমরা যে কারো সাথে সহজে যোগাযোগ করতে পারি, কিন্তু আমরা যদি এটি সঠিকভাবে ব্যবহার না করি তবে এটি আমাদের কাছের বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয়-স্বজন, এবং পরিবারের সদস্যদের থেকে দূরত্ব তৈরি করতে পারে।
অনেক সময় দেখা যায়, মানুষ পরিবারের সাথে বেড়াতে গিয়ে বা রেস্টুরেন্টে বসেও ফোন ব্যবহার করছে এবং একে অপরের সাথে কথা বলছে না।
শিশুদের জন্য মোবাইল ফোনের উপকারিতা ও অপকারিতা
বর্তমানে শিশুরা খেলনা নিয়ে খেলার পরিবর্তে মোবাইল ফোন নিয়ে বসে থাকে এবং বিভিন্ন ধরনের কার্টুন দেখে। কিছুদিন পর তারা গেমস খেলা শুরু করে এবং তাতে আসক্ত হয়ে পড়ে। কল্পনা করুন আপনি আপনার পারিবারিক নৈশভোজে আছেন এবং লক্ষ্য করছেন আপনার বাচ্চা আপনাদের সাথে কথোপকথনে অংশ নেওয়ার পরিবর্তে মোবাইল ফোন স্ক্রোল করছে।
আপনি পার্কে আছেন এবং একদল শিশু একসাথে খেলার পরিবর্তে তারা মোবাইল ফোনে গেম খেলছে। এটা স্পষ্ট যে তারা মোবাইলের প্রতি আসক্ত হয়ে পড়েছে, যা স্বাস্থ্য এবং মানসিক দিক দিয়ে ক্ষতিকর। এই আর্টিকেলে আমি আপনাকে শিশুদের জন্য মোবাইল ফোনের উপকারিতা ও অপকারিতা গুলো জানাবো। চলুন শুরুতে শিশুদের জন্য মোবাইল ফোনের উপকারিতা গুলো জেনে নিন।
শিশুদের জন্য মোবাইল ফোনের উপকারিতা
খারাপ সময়ও শিশুদের বিনোদন দেয়: শুধু বাচ্চারা নয় প্রাপ্তবয়স্করাও তাদের ফোনের মাধ্যমে বিনোদন উপভোগ করে থাকে। মোবাইল ফোনে থাকা মজার ভিডিও, কার্টুন এবং আসক্তিমূলক গেম শিশুদের অফুরন্ত বিনোদন প্রদান করে। সুতরাং আপনার সন্তানের একঘেয়েমি কাটানোর জন্য কিছুক্ষণের জন্য মোবাইল ফোন দিতে পারেন। তবে খেয়াল রাখতে হবে তারা যেন আসক্ত হয়ে না পড়ে।
শিক্ষাক্ষেত্রে মোবাইল ফোনের উপকারিতা: মোবাইল ফোন শিশুদের জন্য চমৎকার জ্ঞান অর্জনের উৎস হতে পারে। বিভিন্ন শিক্ষামূলক অ্যাপস্, ভিডিও এবং অনলাইন কোর্স এর মাধ্যমে শিশু জ্ঞান লাভ করতে পারে। মোবাইল ফোনে এমন অ্যাপস রয়েছে যেগুলো শিশুদের পড়তে, লিখতে এবং মৌলিক গণিত শিখতে সাহায্য করতে পারে।
শিশুদের জন্য মোবাইল ফোনের অপকারিতা
আসক্তি: শিশুরা অতিরিক্ত মোবাইল ফোন ব্যবহারের ফলে ভয়াবহ ভাবে আসক্ত হয়ে পড়ে। আমরা সকলেই দেখেছি যে বাচ্চারা ঘণ্টার পর ঘণ্টা ফোন চালাচ্ছে বা গেম খেলছে। এর ফলে মনোযোগ কমে যায়, ঘুমের অভাব দেখা দেয়, স্কুলের পড়ার কাজে ফোকাস করতে অসুবিধা হয়, সামাজিক বিচ্ছিন্নতা এবং শারীরিক ক্রিয়াকলাপ হ্রাসের মতো নেতিবাচক ফলাফল দেখা দেয়।
একজন অভিভাবক হিসেবে, ফোন ব্যবহারের সীমা নির্ধারণ করা এবং আপনার সন্তানকে অন্যান্য ক্রিয়াকলাপে জড়িত হতে উৎসাহিত করা আপনার এবং শিশুর জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
ঘুমের ব্যাঘাত: মোবাইল ফোনে আটকে থাকা শিশুদের মধ্যে একটি সাধারণ সমস্যা দেখা যায় তা হল ঘুম ঠিকমতো না হওয়া। এতে মস্তিষ্কের সমস্যা দেখা দেয়, শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে এবং বিরক্তি অনুভব হয়।
উপসংহার: মোবাইল ফোনের উপকারিতা ও অপকারিতা
মোবাইল ফোনের উপকারিতা ও অপকারিতা আরও অনেক রয়েছে। মোবাইল ফোনের উপকারিতা গুলো সঠিকভাবে জেনে বুঝে ব্যবহার করলে আমাদের জীবনের উন্নয়ন ঘটানো সম্ভব। কিন্তু এর সাথে মোবাইল ফোনের অপকারিতা থেকেও বাঁচতে হবে।
মোবাইল ফোনে অবশ্যই পাসওয়ার্ড ব্যবহার করা উচিত এবং অযথা সকল ধরনের অ্যাপস ডাউনলোড করা এবং সেগুলোকে অ্যাক্সেস দেওয়া উচিত নয়। সম্মানিত পাঠক আজকে আপনারা মোবাইল ফোনের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানতে পারলেন।
আশাকরি মোবাইল ফোনের উপকারিতা ও অপকারিতা গুলো জেনে আপনি উপকৃত হয়েছেন। মোবাইল ফোনের অপকারিতা বা ক্ষতিকর প্রভাব থেকে আপনার বন্ধুদেরকে সাবধান করতে এই আর্টিকেলটি শেয়ার করবেন। ধন্যবাদ।