টয়লেটে যে কাজ করা যাবেনাপ্রিয় পাঠক, আপনি হয়তো কি কি কারণে ওযু ভেঙ্গে যায়, মোজার উপর মাসেহ করার পদ্ধতি ও শর্ত, ওযুর ফরজ কয়টি ও কি কি, ওযু করার ফজিলত অথবা ওযু সম্পর্কে বিস্তারিত জানার জন্য এই পোস্টটি পড়ুন।
উপরোক্ত টপিক গুলো ছাড়াও এখানে আমরা কি কি কারণে ওযু ভেঙ্গে যায় না, ওযু করার নিয়ত, ওযু করার সঠিক নিয়ম, ওযুর মোস্তাহাব সমূহ এবং ওযু করার দোয়া সহ আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ টপিক তুলে ধরব যা সকলের জন্য জানা আবশ্যক।
ভূমিকা
ওযু শব্দটি আরবি। এর আভিধানিক অর্থ হলো উজ্জ্বলতা। ইসলামী শরীয়তের পরিভাষায় পবিত্র পানি দ্বারা মুখমণ্ডল, উভয় হাতের কব্জি পযর্ন্ত ও উভয় পায়ের টাখনু পযর্ন্ত ধৌত করা ওযু বলা হয়। ওযু অনেক গুরুত্ব ও ফজিলত রয়েছে।
নামাজের মত গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত শুদ্ধ হওয়ার পূর্বশর্ত হলো ওযু। তাই ওযুকে পূর্ণতা দানের জন্য এর প্রতিটি ফরজ, সুন্নাত ও মুস্তাহাব কাজের প্রতি দৃষ্টি রাখা আমাদের উচিত।
ওযু করার নিয়ত
ওযু করার আগে মনে মনে সংকল্প করবেন যে – আমি নামাজ বৈধ হওয়া এবং আল্লাহর নৈকট্য লাভের উদ্দেশ্যে পবিত্রতা অর্জনের জন্য ওযু করছি। এরকম সংকল্প করলে ওযু করার নিয়ত হয়ে যাবে।
আরও পড়ুন দাড়ি কাটলে কি ক্ষতি হয়
মূলত নিয়ত শব্দের অর্থ হল ইচ্ছা করা কল্পনা করা। সুতরাং কোন কিছু করার ইচ্ছা বা কল্পনা করলেই সেটা নিয়ত হয়ে যায়। আলাদা করে আরবিতে নিয়ত করা জরুরী নয়।
ওযু করার দোয়া
ওযু করার শুরুতে এই দোয়া পড়তে হয় – বিসমিল্লা-হির্ রহমা-নির রহীম, বিসমিল্লা-হিল্ আলিয়্যিল আযীমি ওয়াল হামদু লিল্লা-হি আ’লা দ্বীনিল্ ইসলা-মি। আল ইসলা-মু হাক্কুন ওয়াল কুফরু বা-ত্বিলুন।
অর্থ: পরম করুণাময় ও দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু করছি। সমস্ত প্রশংসা মহান আল্লাহর জন্য যিনি আমাদের দ্বীন ইসলামের উপর রেখেছেন। ইসলাম সত্য ধর্ম এবং কুফর ভ্রান্তি।
ওযুর শেষে পড়ার দোয়া – ওযুর শেষে কালিমায়ে শাহাদাত পড়া – আশহাদু আল্লা-ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু ওয়াহদাহু লা-শারীকালাহু ওয়া আশহাদু আন্না মুহাম্মাদান আ’বদুহু ওয়া রসূলুহু।
অর্থ: আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নেই। তিনি এক, তার সমকক্ষ কেউ নেই এবং আরও সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মোহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহ তায়ালার বান্দা ও রাসূল।
ফযিলত : হযরত উমর (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, যে ব্যক্তি ওযুর শেষে এই কালেমা একবার পড়বে তার জন্য বেহেশতের আটটি দরজা খোলা থাকবে। সে যে দরজাতে ইচ্ছা প্রবেশ করতে পারবে। (সহীহ মুসলিম)
ওযুর ফরজ কয়টি ও কি কি
ওযুর ফরজ মোট চারটি। যথা –
- সমস্ত মুখমণ্ডল (থুতনির নিচ পর্যন্ত) একবার ধোয়া।
- উভয় হাত কনুইসহ একবার ধোয়া।
- মাথার চার ভাগের একভাগ মাসেহ করা।
- উভয় পায়ের গোড়ালি পর্যন্ত একবার ধোয়া।
ওযুর এই চারটি ফরযের মধ্যে একটিও বাদ গেলে ওযু হবেনা।
মুখমণ্ডল ধৌত করার সীমা সম্পর্কে ইমামগণের মাঝে মতপার্থক্য পরিলক্ষিত হয়। নিম্নে তা উল্লেখ করা হলো –
- ইমাম আবু হানিফা ও মোহাম্মাদ (র)-সহ অধিকাংশ ফকীহের মতে, মুখমণ্ডলের সীমা হচ্ছে, কপালের উপরিভাগে চুলের গোঁড়া হতে থুতনির নিচ পর্যন্ত এবং এক কানের লতি হতে অপর কানের লতি পর্যন্ত।
- ইমাম শামসুল আইম্মা (র) এর মতে, কানের লতি থেকে আরম্ভ করে যে স্থানে স্বভাবত দাড়ি উঠে থাকে সে অংশটুকু ধৌত করা অপরিহার্য নয় বরং ভিজিয়ে দেয়াই যথেষ্ট।
উভয় হাত ধৌত করার ক্ষেত্রে ইমামগণের মাঝে মতবিরোধ রয়েছে। যেমন –
- ইমাম আযম আবু হানিফা রহিমাহুল্লাহ এর মতে, কনুইসহ উভয় হাত ধৌত করা ফরজ।
- ইমাম যুফার রহিমাহুল্লাহ বলেন কনুই ধৌত করা ফরজ নয়।
মাথা মাসেহ করার ক্ষেত্রে ইমামদের মাঝে মতবিরোধ রয়েছে। যেমন –
- ইমাম মালেক (র) বলেন, পুরো মাথা মাসেহ করা ফরয।
- ইমাম শাফেয়ী (র) বলেন, যে পরিমাণ মাসেহ করলে মাসেহ বলা হয়, সে পরিমাণ মাসে করা ফরজ।
- ইমাম আবু হানিফা (র) এর মতে, মাথার চারভাগের এক ভাগ মাসেহ করা ফরজ।
ওযু করার সঠিক নিয়ম
পর্যায়ক্রমে সুন্নাত অনুযায়ী ওযু করার নিয়ম উল্লেখ করা হলো – ওযু করার সঠিক নিয়ম হলো প্রথমে নিয়ত করা, যে আমি পবিত্রতা অর্জনের জন্য ওযু করব। ওযুর শুরুতে বিসমিল্লাহ পাঠ করা ও ওযুর দোয়া পড়া। এরপর উভয় হাত কব্জিসহ তিনবার ধোয়া।
এরপর সম্ভব হলে মিসওয়াক করা। তিনবার কুলি করা, কুলির সাথে গড়গড়া করা সুন্নাত, কিন্তু রোজা অবস্থায় গড়গড়া করা নিষেধ। এরপর তিনবার নাকে পানি দেয়া, হাতে পানি নিয়ে নাক দিয়ে টেনে নিতে হবে যাতে নাকের ভেতরের অংশ পযর্ন্ত পরিষ্কার হয়।
সমস্ত মুখমণ্ডল থুতনির নিচসহ তিনবার ধোয়া। ঘন দাড়ি থাকলে খিলাল করা। দাড়ি খিলাল করার পদ্ধতি হলো, দাড়ির ভেতর দিক থেকে ডান হাতের আঙ্গুল দিয়ে আঁচরে দিবে। দাড়ি যদি পাতলা হয় তবে ভেতরের চামড়ায় পানি পৌঁছাতে হবে। তারপর উভয় হাত কনুইসহ তিনবার ধোয়া। উভয় হাতের আঙ্গুল সমূহ খিলাল করা অর্থাৎ উভয় হাতের আঙ্গুল একে অপরের ভেতর প্রবেশ করানো।
সমস্ত মাথা একবার মাসেহ করা। মাথা মাসেহের নিয়ম হলো, ভেজা অবস্থায় উভয় হাতের মধ্যমা, অনামিকা ও কনিষ্ঠা আঙ্গুল একত্র করে মাথার সামনের দিক থেকে পেছনে টেনে নিতে হবে। অতঃপর দুই হাতের তালু মাথার দুই পাশে লাগিয়ে সামনে টেনে আনতে হবে। উভয় কান একবার মাসেহ করা। অর্থাৎ, উভয় হাতের তর্জনী দিয়ে কানের ভেতরে মাসেহ করতে হবে এবং বৃদ্ধাঙ্গুলি দ্বারা কানের বাহিরের দিক মাসেহ করতে হবে।
গর্দান একবার মাসেহ করা। অর্থাৎ উভয় হাতের উল্টা-পিঠ দিয়ে গর্দান মাসেহ করবে। তারপর উভয় পায়ের টাখনুসহ তিনবার ধোয়া। পায়ের আঙ্গুলসমূহ খিলাল করা। পায়ের আঙ্গুল খিলাল করার সময় বাম হাতের কনিষ্ঠাঙ্গুলী দিয়ে প্রথমে ডান পায়ের কনিষ্ঠ থেকে বৃদ্ধ, পুনরায় বাম পায়ের কনিষ্ঠ থেকে বৃদ্ধ এভাবে খিলাল করতে হবে।
এরপর ওযুর শেষে কালিমায়ে শাহাদাত পড়া। এ ছিলো ওযু করার সঠিক নিয়ম। ওযু করার সঠিক নিয়ম জেনে সেভাবে ওযু করলে কি কি ফজিলত পাওয়া যায় চলুন জেনে নেই।
ওযু করার ফজিলত
ওযু করার ফজিলত : ওযুর অনেক ফজিলত রয়েছে। এর মাধ্যমে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন হওয়া যায় এবং মন ভালো থাকে। হযরত আব্দুল্লাহ সুনাবিহী রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু বর্ণনা করেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, ওযু করার সময় ওযুকারী যখন কুলি করে, তখন মুখের সকল সগীরা গুনাহ বের হয়ে যায়। যখন নাকে পানি দেয়, তখন নাকের সগীরা গুনাহসমূহ বের হয়ে যায়।
যখন সে দুই হাত ধৌত করে তখন তার উভয় হাত থেকে এমনকি হাতের নখের নীচ থেকেও গুনাহসমূহ বের হয়ে যায়। আর যখন মাথা মাসেহ করে তখন মাথা থেকে এমনকি কান থেকেও সমস্ত (সগীরা) গুনাহ বের হয়ে যায়। পা ধোয়ার সময় পা থেকে এমনকি উভয় পায়ের নীচ থেকে সমস্ত সগীরা গুনাহ পানির সাথে ঝরে যায়।
এরপর তাঁর মসজিদে গমন, নামাজ আদায় করা, তাঁর জন্য অতিরিক্ত সওয়াবের কাজ হিসেবে পরিগণিত হয়। (নাসায়ী, ইবনে মাজাহ)
ওযু আমাদের পবিত্র করে। আর আল্লাহ তায়ালা বলেন, নিশ্চয় আল্লাহ ভালোবাসেন পবিত্রতা অবলম্বনকারী এবং তওবাকারীদের। (সূরা বাকারা : ২২২ নং আয়াত)
আবু হুরাইরা (র) হতে বর্ণিত, রাসূল (সা.) বেলালকে জিজ্ঞাসা করলেন তোমার সবচেয়ে ভালো আমল সম্পর্কে আমাকে বল, আমি বেহেশতে তোমার জুতার (হাঁটাচলার) শব্দ শুনতে পেয়েছি। বেলাল (র) বলেন, আমার সবচাইতে ভালো আমল হচ্ছে, আমি দিনে অথবা রাতে উত্তমরূপে ওযু করি এবং নামাজ আদায় করি।
সুতরাং বোঝা গেল বেলাল (র) এর একটি বিশেষ আমল হলো সবসময় ওযু অবস্থায় থাকা বা পবিত্র থাকা। এছাড়াও ওযু অবস্থায় ঘুমানোও সুন্নাত। ওযু করার ফজিলত আমরা জানলাম, এখন জেনে নিব কি কি কারণে ওযু ভেঙ্গে যায়।
কি কি কারণে ওযু ভেঙ্গে যায়
কি কি কারণে ওযু ভেঙ্গে যায় তা নিম্নরূপ –
- পায়খানা অথবা প্রস্রাবের রাস্তা দিয়ে কিছু বের হওয়া। যেমন – পেশাব, পায়খানা, বাতাস ইত্যাদি। কোরআনে বলা হয়েছে, তোমাদের কেউ পায়খানা থেকে এলে ওযু বিনষ্ট হবে।
- শরীরের কোনো স্থান হতে রক্ত, পুঁজ বা পানি বের হয়ে স্থানচ্যুত হয়ে পড়া। রাসূল (স) বলেন, প্রত্যেক প্রবাহিত রক্তের কারণে ওযু আবশ্যক।
- মুখ ভর্তি বমি হওয়া। হাদিসে এসেছে যার মুখ ভরে বমি হবে, সে যেন নতুন করে ওযু করে নেয়।
- সংজ্ঞাহীনতা বা উন্মাদনার কারণে জ্ঞানহারা হয়ে যাওয়া।
- রুকু ও সেজদাবিশিষ্ট নামাজে অট্টহাসি দেয়া। মহানবী (স) বলেন, তোমাদের মধ্যে যে (নামাজে) অট্টহাসি দেয়, সে যেন ওযু ও নামাজ উভয়টি পুনরায় আদায় করে নেয়।
- কোনো জিনিসের সাথে ভর দিয়ে এমন গভীর নিদ্রায় যাওয়া যে, জিনিসটি সরিয়ে ফেললে ব্যক্তি পড়ে যাবে।
- পাগল বা মস্তিষ্ক বিকৃত হওয়া।
ওযু ভঙ্গ হওয়া স্বাভাবিক ব্যাপার। যেসব কারণে ওযু ভঙ্গ হয়, কি কি কারণে ওযু ভেঙ্গে যায় সে সম্পর্কে জ্ঞান রাখা প্রাপ্তবয়স্ক প্রতিটি মুসলিমের জন্য অপরিহার্য।
কি কি কারণে ওযু ভেঙ্গে যায় না
- হাঁটুর উপরে কাপড় উঠে গেলে।
- মৃত ব্যক্তিকে গোসল করালে।
- উটের গোশত বা আগুনে রান্না করা কোনো খাদ্য খেলে। তবে কোনো কোনো মাজহাব মতে উটের গোশত বা আগুনে রান্না করা খাদ্য খেলে ওযু ভেঙ্গে যায় কিন্তু হানাফি মাজহাব মতে ভঙ্গ হবে না।
- ওযুর পর নখ বা চুল কাটলে।
- কারো দিকে কু’নজরে তাকালে।
- শিশুকে দুধ পান করালে।
- সিজদায়ে তিলাওয়াত বা জানাযার নামাজে অট্টহাসি দিলে।
- অশ্লীল কথা বললে।
- টিভি দেখলে।
ওযুর মুস্তাহাব সমূহ
- পবিত্রতা অর্জনের নিয়ত করা।
- তরতীব রক্ষা করা।
- সমস্ত মাথা মাসেহ করা।
- ডানদিক থেকে ওযু শুরু করা, যে কোনো অঙ্গের ডান অঙ্গটি আগে ধৌত করা।
- এক অঙ্গ ধৌত করার সাথে সাথে অপর অঙ্গ ধৌত করা, যাতে কোনো অঙ্গ শুকিয়ে না যায়।
- ঘাড় মাসেহ করা।
মোজার উপর মাসেহ করার পদ্ধতি ও শর্ত
ওযু করার পর যদি মোজা পরিধান করে অতঃপর ওযু চলে যায় মুকিম (যিনি মুসাফির নন) একদিন একরাত ও মুসাফির তিনদিন তিন রাত মাসেহ করতে পারবে। এ সময়টা শুরু হবে ওযু ছুটে যাওয়ার পর থেকে।
মূলত মোজার উপর মাসেহ করার পদ্ধতি হচ্ছে, দুই হাত অব্যবহৃত পানিতে ভিজিয়ে মোজার উপরিভাগে হাতের আঙ্গুলগুলো কিছুটা ফাঁক করে ডান হাতের আঙ্গুল দিয়ে দিয়ে ডান পা এবং বাম হাতের আঙ্গুল দিয়ে বাম পা মাসেহ করতে হবে। আঙ্গুলগুলো একটু চাপ সহকারে নিচ থেকে উপরে টেনে আনতে হবে, যেন মোজার উপর ভেজা হাতের স্পর্শ অনুভূত হয়।
ইমাম মালেক, শাফেয়ী ও আহমদ (র) এর মতে, মোজার উপর ও নিচ উভয় দিক মাসেহ করতে হবে। ইমাম আবু হানিফা, আহমদ ও সুফিয়ান সাওরী (র) এর মতে, শুধু মোজার উপরাংশে মাসেহ করতে হবে।
মোজার উপর মাসেহ জায়েজ হওয়ার শর্তাবলি
মোজার উপর মাসেহ করার পদ্ধতি ও শর্ত গুলো নিচে দেওয়া হলো –
- চামড়ার এমন মোজা হওয়া, যা টাখনুসহ পা ঢেকে রাখে।
- এমন মোটা হওয়া যা কোনো কিছু দিয়ে না বাঁধলেও পায়ের সাথে লেগে থাকে।
- এমন মজবুত হওয়া, যা পায়ে দিয়ে কমপক্ষে তিন মাইল হেঁটে যাওয়া যায়।
- এতখানি মোটা হওয়া, যেন ভেতর থেকে পায়ের চামড়া দেখা না যায়।
- এতটুকু পুরু হওয়া, যেন উপর দিয়ে পানি ঢেলে দিলে পানি চুষে নিতে না পারে।
- মোজা পায়ে চলতে গিয়ে যদি মোজা ফেটে যায়, তাহলে ফাটার পরিমাণ এতটুকু না হওয়া যে, এক আঙ্গুল পরিমাণ প্রকাশ হয়ে পড়ে।
- পবিত্র শরীরে মোজা পরিধান করা।
- মোজা পবিত্র হওয়া।
- পানি দিয়ে পবিত্রতা অর্জন-পূর্বক মোজা পরিধান করা।
- চরকার সূতায় তৈরি অথবা পশমি মোজার উপর মাসেহ বৈধ নয়।
মোজার উপর মাসেহ করার পদ্ধতি ও শর্ত : সাহেবাইন বলেন – পাগড়ী, টুপি, বোরখা এবং হাত মোজার উপর মাসেহ করা বৈধ নয়। ব্যান্ডেজ এর উপর মাসেহ করা বৈধ যদিও তা বিনা ওযুতে বাঁধে। যদি ক্ষত না সারার পূর্বে ব্যান্ডেজ খুলে যায় তবুও মাসেহ বাতিল হবে না। ক্ষত ভালো হওয়ার পরে খুলে গেলে মাসেহ বাতিল হবে।
মোজার উপর মাসেহ করার পদ্ধতি ও শর্ত – ওযু করার ফজিলত – লেখকের মন্তব্য
ইবাদতের পূর্ব শর্ত হলো তাহারাত অর্থাৎ পবিত্রতা অর্জন করা। আর তাহারাত এর উত্তম মাধ্যম হলো ওযু। আর ওযুর জন্য সুনির্দিষ্ট নিয়ম নীতি রয়েছে, সেসবই আমরা আলোচনা করেছি। ওযুর ফরজ অঙ্গ গুলো চুল পরিমান শুকনা থাকলে ওযু হবে না। তাই নিয়ম মেনে ওযু করবেন। আল্লাহ আমাদের জেনে বুঝে আমল করার তৌফিক দান করুন, আমীন।
তাহলে আজকে আমরা মোজার উপর মাসেহ করার পদ্ধতি ও শর্ত, মোজার উপর মাসেহ জায়েজ হওয়ার শর্তাবলি, ওযুর মুস্তাহাব সমূহ, কি কি কারণে ওযু ভেঙ্গে যায় না, কি কি কারণে ওযু ভেঙ্গে যায়, ওযু করার ফজিলত, ওযু করার সঠিক নিয়ম, ওযুর ফরজ কয়টি ও কি কি, ওযু করার দোয়া, ওযু করার নিয়ত সম্পর্কে।