ভাইরাসের উপকারিতা ও অপকারিতা জানুনপ্রিয় পাঠক, আপনি কি ব্যাকটেরিয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা, ব্যাকটেরিয়া জনিত রোগ কি কি অথবা ব্যাকটেরিয়া সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চান? তাহলে আপনি ঠিক জায়গায় এসেছেন।
এখানে ব্যাকটেরিয়ার উপকারিতা, ব্যাকটেরিয়ার অপকারিতা সহ এখানে আমরা ব্যাকটেরিয়া কি, ব্যাকটেরিয়া কে আবিষ্কার করেন, ব্যাকটেরিয়ার বাসস্থান, ব্যাকটেরিয়ার গঠন ও ব্যাকটেরিয়ার বৈশিষ্ট্য এবং আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আলোচনা করব।
সূচিপত্র: ব্যাকটেরিয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা – ব্যাকটেরিয়া জনিত রোগ কি কি
.
ভূমিকা
ব্যাকটেরিয়া শব্দটি বহুবচন, একবচনে ব্যাকটেরিয়াম। ব্যাকটেরিয়া শব্দের অর্থ হলো দণ্ড। এককোষী, সরল আণুবীক্ষণিক আদি প্রকৃতির কোষ দিয়ে গঠিত অণুজীব যা সাধারণত ক্লোরোফিল বিহীন মৃতজীবী অথবা পরজীবী প্রধানত দ্বিবিভাজন প্রক্রিয়ায় সংখ্যা বৃদ্ধি করে, জটিল কোষপ্রাচীর বিশিষ্ট এ অণুজীবকে ব্যাকটেরিয়া বলে।
ব্যাকটেরিয়া কে আবিষ্কার করেন
ব্যাকটেরিয়া (একবচনে ব্যাকটেরিয়াম) পৃথিবীতে আবিষ্কৃত সর্বপ্রথম অণুজীব এবং পৃথিবীর প্রথম জীবন যা আজ বিজ্ঞানীদের নিকট প্রতিষ্ঠিত মত। ১৬৭৬ খ্রিস্টাব্দে এন্টনি ভন লিউয়েন হুক (Antoni Von Leeuwen Hoek) সর্বপ্রথম ব্যাকটেরিয়া আবিষ্কার করেন। এজন্য এন্টনি ভন লিউয়েন হুক কে অণুজীব বিজ্ঞানের জনক বলা হয়। ১৮২৮ সালে সি. জি. এহরেনবার্গ এ অণুজীবের নাম দেন ব্যাকটেরিয়া। যার প্রকৃত অর্থ দণ্ড।
১৬৭৬ সালে ওলন্দাজ বিজ্ঞানী লিউয়েন হুক তার নিজের তৈরি অণুবীক্ষণ যন্ত্রের নিচে এক ফোঁটা বৃষ্টির পানিতে কতকগুলো অতি ক্ষুদ্র দণ্ডকার জীবের অস্তিত্ব আবিষ্কার করেন। এসব ক্ষুদ্র জীবের নাম দিয়েছিলেন “Animalcules” বা ক্ষুদে প্রাণী।
তিনি ১৬৭৩ থেকে ১৭২৩ সালের মধ্যে Animalcules এর বর্ণনাসহ Royal Society of London কে বহু চিঠি দিয়েছিলেন। কিন্তু দুঃখের বিষয় লিউয়েন হুক তার এ ক্ষুদ্র জীব আবিষ্কারের ২০০ বছর পর্যন্ত বিজ্ঞানীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে ব্যর্থ হন।
ঊন-বিংশ শতাব্দীর শেষার্ধ হতে অদ্যাবধি লুই পাস্তুর (Louis Pasteur) ও রবার্ট কক (Robert Koch) সহ বিজ্ঞানীগণের নানা ধরনের রোগের কারণ, আবিষ্কার ও গবেষণার মাধ্যমে এত বেশি তথ্য উদঘাটন করা সম্ভব হয়েছে যে, তাদের সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনার জন্য বর্তমানে ব্যাকটেরিওলজি (Bacteriology) নামের বিজ্ঞানের একটি নতুন শাখা গঠিত হয়েছে। এ শাখাতে এ পর্যন্ত ২৫০০ ধরনের ব্যাকটেরিয়া সনাক্তকরণ তথা আবিষ্কার করা সম্ভব হয়েছে।
ব্যাকটেরিয়ার বাসস্থান
ব্যাকটেরিয়া নেই এমন স্থান পাওয়া প্রায় দুষ্কর। এ কথা বলা যায় যে ব্যাকটেরিয়া পৃথিবীর প্রায় সর্বত্র বিদ্যমান। প্রচণ্ড ঠাণ্ডাতে ১৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা থেকে শুরু করে ৮০ ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রা পর্যন্ত ব্যাকটেরিয়া বাঁচতে পারে। বায়ুর উপস্থিতি বা অনুপস্থিতিতেও ব্যাকটেরিয়া বেঁচে থাকতে পারে। আবার ব্যাকটেরিয়া প্রাণীদেহে পরজীবী হিসাবে বাস করে। কিছু ব্যাকটেরিয়া মিথোজীবী হিসেবেই উদ্ভিদ বা প্রাণীদেহে বসবাস করে। যেমন –
- উদ্ভিদদেহে রোগ সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়া – Xanthomonus, Erwinia ইত্যাদি।
- মানবদেহে রোগ সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়া – Salmonella typhosa, Mycobactericum tuberculosis, Baciellus anthracis, Diplococcus pneumoniae, Clostridium tetani ইত্যাদি।
- মাটিতে বসবাসকারী ব্যাকটেরিয়া – Rhizobium, Azotobacter, Bacillus, Chlostridium, Nitrosococcus, Nitrosomonas ইত্যাদি।
- পানিতে বসবাসকারী ব্যাকটেরিয়া – Salmonella, Vibrio, Escherichia, Shigella ইত্যাদি।
- বায়ুতে বসবাসকারী ব্যাকটেরিয়া – Micrococcus, Bacillus, Pseudomonas ইত্যাদি।
- দুধে বসবাসকারী ব্যাকটেরিয়া – Lactobacillus, E. coli, Sarcina, Streptococcus lactis Mycobacterium ইত্যাদি।
- মিথোজীবী ব্যাকটেরিয়া – Rhizobium, Japonicum, Spirillum lipoferum ইত্যাদি।
ব্যাকটেরিয়ার গঠন
এককোষী ক্ষুদ্র আণুবীক্ষণিক জীব যাদের নিউক্লিয়াসটি সুসংগঠিত নয় এবং যারা সাধারণত ক্লোরোফিল বিহীন ও সরলতম তাদেরকে ব্যাকটেরিয়া বলে। ইউব্যাকটেরিয়ালিস বর্গভুক্ত এককোষী ব্যাকটেরিয়ার কোষদেহে একটি জটিল আবরণী পর্দা এবং আবরণী পর্দা মধ্যস্থ প্রোটোপ্লাস্টের সমন্বয়ে গঠিত। অর্থাৎ ব্যাকটেরিয়ার দেহ কোষ আবরণী ও প্রোটোপ্লাস্ট সমন্বয়ে গঠিত।
ব্যাকটেরিয়ার বৈশিষ্ট্য
নিচে ব্যাকটেরিয়ার প্রধান প্রধান বৈশিষ্ট্য গুলো উল্লেখ করা হলো –
- ব্যাকটেরিয়া জীবজগতের অন্তর্ভুক্ত কোষীয় জীবের মধ্যে ক্ষুদ্রতম ও সরলতম জীব।
- এরা প্রধানত এককোষী। কিছু সংখ্যক ব্যাকটেরিয়া সূত্রাকার হলেও তাদের সূত্রগুলো ব্যবধায়ক বিশিষ্ট না হওয়ায় পৃথক পৃথক কোষ বিভেদিত থাকে না।
- অধিকাংশ ব্যাকটেরিয়া ক্লোরোফিলবিহীন, এ কারণে তারা পরভোজী, মৃতজীবী, পরজীবী আবার কখনো বা মিথোজীবী। কতিপয় ব্যাকটেরিয়া স্বভোজি। কিছু কিছু স্বভোজী ব্যাকটেরিয়া সরাসরি সালোকসংশ্লেষণ কালে আলোকে শক্তির উৎস রূপে গ্রহণ করে।
- ব্যাকটেরিয়াম কোষে সুগঠিত কোষ প্রাচীর বিদ্যমান।
- কোষে সাইটোপ্লাজম বর্তমান।
- ব্যাকটেরিয়া কোষে মাইটোসিস বিভাজন না ঘটে অ্যামাইটোসিস বিভাজন ঘটে।
- এরা দ্বিবিভাজন ও রেণু উৎপাদন প্রক্রিয়ায় বংশবিস্তার ঘটায়।
- এদের প্রকৃত যৌনজনন অনুপস্থিত।
- অন্যান্য জীবের ন্যায় ব্যাকটেরিয়াতেও শ্বসন ঘটে। এ শ্বসন সাইটোপ্লাজমীয় পর্দা ও কোষ প্রাচীরের মধ্যবর্তী স্থানে অবস্থিত এক প্রকার উৎসেচকের সাহায্যে নিয়ন্ত্রিত।
- ফাজ ভাইরাসের প্রতি ব্যাকটেরিয়া অত্যন্ত সংবেদনশীল।
- অধিকাংশ ব্যাকটেরিয়া মানুষসহ বিভিন্ন উদ্ভিদ ও প্রাণীর নানা রোগ সৃষ্টি করে।
চলুন এখন ব্যাকটেরিয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জেনে নেই।
ব্যাকটেরিয়ার উপকারিতা
ব্যাকটেরিয়ার উপকারিতা গুলো নিচে তুলে ধরা হলো –
কৃষিক্ষেত্রে – বহু প্রজাতির স্যাপ্রোফাইটিক এবং সিম্বায়োটিক ব্যাকটেরিয়া মাটির উর্বরতা বৃদ্ধি করে এবং উদ্ভিদ নাইট্রোজেন সরবরাহ করে। সম্প্রতি ভারতের বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদ বিজ্ঞানের কয়েকজন গবেষক একটি ব্যাকটেরিয়া আবিষ্কার করেন যার নামকরণ করা হয়েছে প্যান্টোইয়া টেগরী। এই ব্যাকটেরিয়াটি উদ্ভিদের বৃদ্ধি সাধন করতে সাহায্য করে।
মাটির উর্বরতা বৃদ্ধি – মৃত্যুর পর জীবদেহের পচন ক্রিয়া সম্পন্ন করণের মাধ্যমে ব্যাকটেরিয়া মৃতদেহের জৈবিক পদার্থ মাটিতে মেশায়। এতে মাটির উর্বরতা বৃদ্ধি পায়। এক্ষেত্রে এমোনিফাইং ও নাইট্রিফাইং ব্যাকটেরিয়া গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
মাটিতে নাইট্রোজেন সংবন্ধনে – কিছু কিছু অণুজীব তাদের দেহে বর্তমান নাইট্রোজেনাস এনজাইমের উপস্থিতিতে জৈব রাসায়নিক পদ্ধতিতে বায়ুমন্ডলীয় মুক্ত নাইট্রোজেন সঞ্চয় করে নাইট্রোজেন যৌগে পরিণত করে। এর পদ্ধতিকে নাইট্রোজেন সংবন্ধন বলে।
মাটিতে স্বাধীনভাবে বসবাসকারী কিছু ব্যাকটেরিয়া যেমন- Clostridium, Azotobacter প্রভৃতি এবং লিগিউমিনোসি গোত্রভুক্ত উদ্ভিদের মুলের নডিউলে বসবাসকারী মিথোজীবী ব্যাকটেরিয়া বায়ুমণ্ডলের মুক্ত নাইট্রোজেনকে সংবন্ধন প্রক্রিয়ায় নাইট্রোজেন যৌগ পরিণত করে জমিতে নাইট্রোজেনের পরিমাণ বৃদ্ধি করে।
জৈব সার উৎপাদনে – ময়লা, আবর্জনা কিংবা গোবরকে পচিয়ে উদ্ভিদের উপযোগী জৈব সারে পরিণত করতে ব্যাকটেরিয়া এক বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।
দুগ্ধ শিল্পে – ল্যাকটিক এসিড ব্যাকটেরিয়া যেমন- Lactobacillus অবাত প্রক্রিয়ায় চিনি হতে ল্যাকটিক এসিড প্রস্তুত করতে সাহায্য করে। এ ব্যাকটেরিয়ামের সাহায্যে দুধ হতে দই, পনির, মাখন, ঘোল, এক প্রকার মদ্য জাতীয় পানীয় প্রভৃতি প্রস্তুত করা হয়।
চা, কফি, ও তামাক শিল্পে – চা, কফি ও তামাক বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহারযোগ্য করতে বিভিন্ন ব্যাকটেরিয়া নিঃসৃত এনজাইম কাজে লাগে। চা ও তামাক গাছের পাতাকে সুগন্ধ যুক্ত, উজ্জ্বল বর্ণ ও রুচিকর করতে Baccillus megaterium সাহায্য করে।
পাটশিল্পে – Clostridium butricum নামক বিউটারিক এসিড ব্যাকটেরিয়াম পেকটিন বিনষ্ট করে পাট, শন প্রভৃতি গাছের কান্ড হতে তন্তু নিষ্কাশনে সাহায্য করে।
চামড়া শিল্পে – চামড়া শিল্পে কাঁচা চামড়া পাকা করতে ব্যাকটেরিয়ার প্রোটিয়েজ এনজাইম ব্যবহৃত হয়।
ঔষধ শিল্পে – আধুনিক চিকিৎসা জগতের অব্যর্থ মহৌষধ অথবা রোগ জীবাণুনাশক বা এন্টিবায়োটিক ঔষধ তৈরিতে এবং কয়েক প্রকার ভিটামিন তৈরিতে ব্যাকটেরিয়ার অবদান অনস্বীকার্য।
ভ্যাকসিন (Vaccine) তৈরিতে – নিষ্ক্রিয় বা atenuated ব্যাকটেরিয়া ব্যবহার করে কলেরা, টাইফয়েড, ডিপথেরিয়া, টিটেনাস, যক্ষ্মা প্রভৃতি মারাত্মক রোগের প্রতিষেধক ভ্যাকসিন তৈরি করা হয়ে থাকে।
এছাড়া অ্যালকোহল ও এসিড উৎপাদনে, উৎসেচক তৈরিতে, সিলেজ তৈরিতে, সয়া সস ও টেস্টিং সল্ট তৈরিতে, প্রাকৃতিক গ্যাসের উৎপাদনে, কীট পতঙ্গের জীবজ নিয়ন্ত্রণে, সেলুলোজ পরিপাকে ও জিন প্রকৌশলে ব্যাকটেরিয়া অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।
ব্যাকটেরিয়ার অপকারিতা
ব্যাকটেরিয়ার অপকারিতা গুলো হল –
মানুষের ব্যাধি – মানুষের বহু সংক্রামক ও মারাত্মক রোগ নানাবিধ ব্যাকটেরিয়া দ্বারা সৃষ্টি হয় বলে প্রমাণিত হয়েছে। এর মধ্যে টাইফয়েড, প্যারাটাইফয়েড, নিউমোনিয়া, যক্ষ্মা, কলেরা, ডিপথেরিয়া প্রভৃতি বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।
পশু ও পাখির রোগ সৃষ্টি – গৃহপালিত পশুপাখি ও বন্য প্রাণীর বহু রোগ ব্যাকটেরিয়া দ্বারা সৃষ্টি হয়ে থাকে।
উদ্ভিদের রোগ সৃষ্টিতে – কৃষি ও অকৃষি অপুষ্পক ও সপুষ্পক সব ধরনের উদ্ভিদে ব্যাকটেরিয়াজনিত রোগ হয়ে থাকে। অনেক সময় এসব রোগ ব্যাধির জন্য আবাদি ফসলের ফলন বহুগুণ কমে যায়। উদ্ভিদের ব্যাকটেরিয়াজনিত রোগের মধ্যে টমেটো, আলু, শশা, কুমড়া জাতীয় গাছের ঢলে পড়া রোগ, ধান ও শিমের ধ্বসা রোগ, শসা ও বেগুনের গোড়া পচা রোগ ও গাজরের পচন রোগ উল্লেখযোগ্য।
খাদ্যবস্তু পচন ও বিষাক্তকরণ – কিছু কিছু ব্যাকটেরিয়া কাঁচা বা রান্না করা নানান খাদ্য সামগ্রীতে যেমন- মাছ, মাংস, ফলমূল, দুধ, সবজি, রুটি, জ্যাম জেলি প্রভৃতি দূষিত করে। Cl. botulinum নামক ব্যাকটেরিয়া যখন খাদ্য সামগ্রীর সংস্পর্শে আসে তখন তারা তাদের দেহ থেকে এক প্রকার বিষাক্ত পদার্থ নিঃসৃত করে, ফলে খাদ্য সামগ্রী বিষাক্ত হয়ে পড়ে। এরূপ খাদ্য সামগ্রী গ্রহণ করলে মারাত্মক রোগ দেখা দেয়।
জমির উর্বরতা হ্রাস – কয়েক প্রকার মাটিতে বসবাসকারী ব্যাকটেরিয়া নাইট্রেটকে বিশ্লেষণ করে এবং গ্যাসীয় N2 মুক্ত করে। এর ফলে জমিতে নাইট্রোজেনের পরিমাণ কমে যায় ও জমির উর্বরতা হ্রাস পায়।
এছাড়াও পানি দূষণের বিভিন্ন প্রকার ব্যাকটেরিয়া যেমন- E.coli, Salmonella, Vibrio প্রভৃতি পানিকে দূষিত করে ও রোগ সৃষ্টিতে সহায়তা করে। টাইফয়েড ও কলেরা রোগ পানি দূষণের কারণে সৃষ্টি হয়। সুতরাং ব্যাকটেরিয়ার অপকারিতা বা ক্ষতিকর দিক গুলো বিবেচনা করে আমাদের সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে।
ব্যাকটেরিয়া জনিত রোগ কি কি
নিচে ব্যাকটেরিয়া জনিত রোগ কি কি ও জীবাণুর (Bacteria) নাম উল্লেখ করা হলো –
ব্যাকটেরিয়া জনিত মানুষের রোগ –
- কলেরা – Vibrio cholerae
- নিউমোনিয়া – Diplococcus pneumoniae
- যক্ষ্মা – Mycobacterium tuberculosis
- ডিপথেরিয়া – Corynebacterium diphtheriae
- Asiatic cholera – Vibrio comma
- টাইফয়েড জ্বর – Salmonella typhosa
- হুপিং কাশি – Heamopilius pertusis
- প্লেগ – Yersinia pestis
- গলবিল ও চর্মের রোগ – Streptococcus pyogens
- টিটেনাস – Clostridium tetani
- গনোরিয়া – Neisseria gonorrhoeae
- মেনিনজাইটিস – Niisseria meningitidis
- ব্যাকটেরিয়াঘটিত আমাশয় – Shigella dysenteriae
- অন্ত্রের প্রদাহ ও শিশুদের ডায়রিয়া – Escherichia coli
- মৃত্র ও জনন নালীর সংক্রামণ – Kelbsiell sp
- সিফিলিস – Treponema pallidum
- ক্ষতের সংক্রামণ – Proteus sp
- স্ত্রীরোগ সংক্রান্ত সংক্রমণ – Candida albicans, Trichomonas vaginalis. Gardnerella vaginalis, Bacteroides fragilis.
ব্যাকটেরিয়া জনিত কারণে পশু ও পাখির ক্ষেত্রে ক্ষয় রোগ, মুরগির কলেরা বা রাণীক্ষেত, ইঁদুরের প্লেগ, গবাদিপশুর রক্তদূষণ রোগ, ঘোড়া, গাধা, ছাগল ও ভেড়ার গল্যানডার প্রভৃতি রোগ সৃষ্টি হয়ে থাকে।
এছাড়া ব্যাকটেরিয়া জনিত কারণে উদ্ভিদের কিছু রোগ হয়ে থাকে। তাহলো – আলু, টমেটো ও তামাকের রোগ, লেবু গাছের কঙ্কার টমেটোর কঙ্কার, আলুর Scab রোগ, ধান গাছের পাতা ধ্বসা, আপেলের আগুনে ঝলসানো রোগ, সবজীর নরম পচা, কুমড়ার ঢলে পড়া রোগ, গোলআলুর রিংরট, সীমের পাতায় কোনাচে দাগ রোগ, আপেলের ক্রাউন গল, গোলাপ গাছের ক্রাউন গল, টমেটোর ক্রাউন গল।
লেখকের মন্তব্য
আমাদের দৈনন্দিন জীবনে ব্যাকটেরিয়ার গুরুত্ব অপরিসীম। ব্যাকটেরিয়া মানুষ প্রাণী ও নানান উদ্ভিদসহ প্রকৃতির জীবের বহু উপকার করে থাকে। উপকারিতার পাশাপাশি মানুষ ও পশুপাখির মরণব্যাধি রোগ সৃষ্টি করে থাকে, এবং ফসলেরও রোগ সৃষ্টি করে। যার কারণে অনেক সময় আমরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হই। এজন্য আমাদের ব্যাকটেরিয়া জনিত রোগ সম্পর্কে সচেতন হতে হবে।
আরও পড়ুন হার্টের সমস্যার লক্ষণ
প্রিয় পাঠক, আমরা আপনাদের ব্যাকটেরিয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা, ব্যাকটেরিয়া জনিত রোগ কি কি, ব্যাকটেরিয়ার বৈশিষ্ট্য, ব্যাকটেরিয়ার গঠন, ব্যাকটেরিয়ার বাসস্থান, ব্যাকটেরিয়া কে আবিষ্কার করেন তা জানালাম। অন্যের উপকারের উদ্দেশ্যে শেয়ার করুন।